/ ছবি: ফাইল /
২৪খবরবিডি: 'এক যুগ পর অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার পানিসম্পদমন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক। এ বৈঠকের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরকালে দিল্লিতে আমন্ত্রণ পাননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।'
'তাঁর সবুজ সংকেত ছাড়া কোনোভাবেই এ নদীর পানি বণ্টনে সমাধানে আসতে পারবে না ভারত-বাংলাদেশ। তাই ঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে তিস্তা চুক্তি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, আপাতত আশ্বাসের মধ্যেই থাকতে হচ্ছে ঢাকাকে। দীর্ঘ এক যুগ ধরে বাংলাদেশ ভারতকে জেআরসির পানিসম্পদমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে আসছিল। তবে তিস্তা নিয়ে কোনো সমাধান ভারত তার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে করতে পারেনি। ফলে এ বৈঠকটিকেও দীর্ঘদিন ধরে ঝুলিয়ে রেখেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জেআরসি বৈঠকের অনুরোধ জানালে এবার ভারত বৈঠকে বসতে রাজি হয়। সেসঙ্গে দ্বিপক্ষীয় জেআরসি বৈঠকের আগে আগস্ট মাসের শুরুতে আলোচনায় বসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দেশটির পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে তাঁদের আলোচনার সব বিষয় গণমাধ্যমে না এলেও ধারণা করা হচ্ছিল, প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তিটি সই করে ফেলবে দুই দেশ। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে আমন্ত্রণ পাননি জানিয়ে দিল্লির এক কূটনীতিক নাম না প্রকাশের শর্তে ২৪খবরবিডিকে বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যমে এরই মধ্যে এসেছে যে, মমতা দিল্লির আমন্ত্রণ পাননি। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো সূচি নেই। ফলে এবারের সফরে তিস্তা চুক্তি না হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।'
'গত ২৫ আগস্ট দুই দেশের মধ্যে ৩৮তম পানিসম্পদমন্ত্রী পর্যায়ের জেআরসি বৈঠক নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সইয়ের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। এই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তিটি সই করতে সর্বাত্মক চেষ্টা ভারতীয় পক্ষ থেকে করা হবে
আপাতত আশ্বাসের মধ্যেই থাকছে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি
বলে জানানো হয়েছে। বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ভারতীয় আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ভারত বাংলাদেশকে না জানিয়ে অভিন্ন নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করবে না বলেও জানিয়েছে বৈঠকে। এর আগে ২০১০ সালে দুই দেশের মধ্যে জেআরসির বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।'
'দিল্লিতে ৩৮তম জেআরসির বৈঠকে অভিন্ন নদী গঙ্গা, তিস্তা, মুন, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার এবং কুশিয়ারা নদীর যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া বন্যাসংক্রান্ত তথ্য বিনিময়, নদীর তীর রক্ষণাবেক্ষণ, অভিন্ন অববাহিকা ব্যবস্থাপনা ভারতীয় আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন পানি বণ্টন চুক্তির জন্য খসড়া তৈরিতে আরও ৮টি অভিন্ন নদীর তথ্য বিনিময়ে জেআরসি বৈঠকে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার এ সফরে দুই দেশের মধ্যে কুশিয়ারা ও ফেনী নদী নিয়ে আলাদা আলাদা চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া ১৯৯৬ সালে করা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির আলোকে আবারও সম্ভাব্যতা যাচাই করতে জেআরসি বৈঠকে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে।ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে আগামীকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ভারত সফর করেন তিনি।'